
ওশান নিউজ প্রতিবেদক : রাজশাহীতে শীতের তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে স্থবিরতা, সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত খেটে খাওয়া মানুষজন।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ ২৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি বাতাসের আর্দ্রতা শতভাগে পৌঁছানোয় শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
সকালে রাজশাহীতে সূর্যোদয় হয় ৬টা ৪৫ মিনিটে। তবে সকাল ৮টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। ভোর থেকে আকাশে নেমে আসে ঘন কুয়াশা, যা পুরো নগরী ও আশপাশের এলাকাকে ঢেকে ফেলে। কুয়াশার কারণে সড়কে যানবাহনগুলোকে ফগ লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। অনেক জায়গায় দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল ধীরগতির হয়ে পড়ে।
সূর্যের অনুপস্থিতি ও ঠান্ডা বাতাসের কারণে সকাল থেকেই মানুষ কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যারা ভোরে কাজে বের হন, তাদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। শীতের কারণে অনেকেই প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এর প্রভাব পড়েছে শহরের সড়ক, বাজার ও কর্মস্থলগুলোতেও।
আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। ফলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় শীতের অনুভূতি বেড়েছে।
বুধবার ২৪ ডিসেম্বর রাজশাহীতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি, যা শীত বাড়ার অন্যতম কারণ।
শীতকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে কষ্টে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক, অটোরিকশাচালকসহ খেটে খাওয়া মানুষজন। তাদের অনেকেই ভোরে কুয়াশা ও ঠান্ডা উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে ঘর ছাড়ছেন। ইতোমধ্যে ফুটপাত ও বাজারে গরম কাপড়ের চাহিদা ও কেনাবেচা বেড়েছে।
চারঘাট থেকে নগরীর বিনোদপুর বাজারে কাজের জন্য আসা শরিফ ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়েছে। ভোরে কাজে বের হওয়া খুব কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। কাজ না করলে সংসার চলবে না, তাই বাধ্য হয়েই বের হতে হচ্ছে। একাধিক কাপড় পরেও ঠান্ডা কমছে না।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক সাগর আলী জানান, সোয়েটার ও জ্যাকেট পরেও শীত সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শীতের কারণে রাস্তায় যাত্রীও কমে গেছে। এতে আয় কমছে এবং কাজ করতেও আগ্রহ পাওয়া যাচ্ছে না।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া সহকারী তারেক আজিজ বলেন, রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে
নেমেছে। একই সঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতা শতভাগ থাকায় শীতের অনুভূতি আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি
পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।